কে বাঁচায় কে বাঁচে'দ্বাদশ শ্রেণী বাংলা

প্রশ্ন:-মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্প ‘কে বাঁচায় কে বাঁচে'নামকরন কতখানি সার্থক তার আলোচনা করো।
উ:- বিশিষ্ট লেখক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন নাম কখনো নামমাত্র হওয়া উচিত নয়। কারণ নাম মানুষের পরিচয় বহন করে কাব্য ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে নামকরণ আরো বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা নাম করণের মধ্য দিয়ে মূল বিষয়বস্তু এবং ব্যঞ্জনা ফুটে উঠে। এখন দেখা দরকার যে ‘কে বাঁচায় কে বাঁচে ‘গল্পটির নামকরণ কতখানি সার্থক।
গল্পের বিষয়বস্তু তে দেখা যায় অনাহারে মৃত্যুর দৃশ্য দেখে মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিক বেদনা কতটা চরমে পৌঁছে যায়। কয়েকমিনিটে তার সুস্থ শরীরটা অসুস্থ হয়ে পড়ে। অফিসে থেকে এসে দরজা বন্ধ করে খেয়ে আসার সব জিনিস উগরে দেয়। তারপর সে ভাবতে শুরু করে অনাহারী মানুষদের কথা
নিজেও অপরাধবোধে ভুগতে থাকে এবং বলে – ‘এর অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত’ নিজেকে সে ধিক্কার দিতে থাকে। কদিন পরে মোহনের সমস্ত টাকা রিলিফ একাউন্টে জমা করে দেয়। তারপর ধীরে ধীরে অফিসে যাওয়া বন্ধ করে দেয়, বাড়িতে যায়না, পরিবারের কথা ভাবে না এবং নিজেকে ফুটপাতবাসী একজন করে তুলে। ফুটপাতে কাড়াকাড়ি করে লঙ্গরখানার খিচুড়ি খায় এবং বলে -গা থেকে এসেছি খেতে পাইনি বাবা আমার খেতে দাও।
মৃত্যুঞ্জয়ের দৃষ্টি পীড়িত মানুষদের বাঁচানোর এই রাস্তা কে লেখক সঠিক বলেনি। তাইতো নিখিলের মধ্য দিয়ে বলতে চেয়েছেন যে এইভাবে দেশের লোক কে বাঁচানো যাবে না। দেশের লোককে বাঁচানোর উপায় পুরোপুরি আলাদা। লেখক গল্পটির নামকরণ করেছেন ‘কে বাঁচায় কে বাঁচে’ কাজেই নামকরণটি যে সার্থক এবং সাফল্য অর্জিত হয়েছে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

Comments